৭ বছর পর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল ২৭ ফেব্রুয়ারি উখিয়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনে প্রাণচাঞ্চল্য
ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
আপডেট সময়
মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
৪১৮
বার পড়া হয়েছে
উখিয়া উপজেলা বিএনপি‘র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলকে সামনে রেখে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্য। দীর্ঘ ৭ বছর পর প্রত্যাশিত এ সম্মেলনে কে হচ্ছেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা, সমালোচনা। তবে বর্তমান উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী রফিক উদ্দিন বলছেন, সভাপতি পদে যে কেউ আসুক না কেন, তার প্রার্থীতা নিশ্চিত। বিএনপি’র বেশ কিছু নেতাকর্মী বলছে ভিন্ন কথা। আগামী দিনের সম্মেলনে সভাপতি পদে সরওয়ার জাহান চৌধুরীও প্রার্থী হতে পারে।
উপজেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি উখিয়া উপজেলা বিএনপি’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজল। রাজাপালং আবুল কাশেম নুরজাহান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক সংসদ হুইপ ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সিরাজুল হক বি.এ। ২০০৯ সালে উখিয়া উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্টিত হয়। দীর্ঘ ৭ বছর যাবত বিএনপি’র উপজেলা সম্মেলন অনুষ্টিত না হলেও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে তেমন কোন মতবিরোধ, দ্বিধাবিভক্ত ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি বলে দাবী করে বেশ কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ বিএনপি নেতা বলেন, কাজী রফিক উদ্দিনের বলিষ্ট নেতৃত্বে উখিয়া বিএনপি এখনো উজ্জীবিত। যদিওবা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দাপটে অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরা ভীত, সন্ত্রস্ত অবস্থায় দিনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক তহিদুল আলম তহিদ বলেন, ২০০২ সালে বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে বিএনপিতে যোগদান করি। ইতিপূর্বে আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। উখিয়া অনার্স কলেজ ও উখিয়া বঙ্গমাতা মুজিব মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করে অনেক গঠনমূলক সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি। তিনি বলেন, বিএনপিতে যোগদানের পর থেকে ২০০৯ সালে যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব হিসাবে সুচারুভাবে দায়িত্ব পালন করে সম্মেলনের মাধ্যমে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হই। সরকারের বিভিন্ন দমন নিপীড়নে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে দুঃসময়ে দলকে নেতাকর্মী ও জনগণের কাছে তুলে ধরেছি। এ সময়ে দ্রুত বিচার আইনে সহ একাধিক মামলার আসামী হয়ে নানাভাবে হয়রানি হয়েছি। উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজালাল চৌধুরী বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে রাজপথে বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম করে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। তিনি দাবী করেন, একজন দক্ষ, সাংগঠনিক, মেধাবী ও সাহসী কর্মী হিসাবে উখিয়া উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সাধারণ নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে আসন্ন সম্মেলন ও কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপি’র আদর্শকে উখিয়া সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার আশা ব্যক্ত করে তিনি কাউন্সিলে কাউন্সিলরগণ সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশা করেন।
রাজাপালং ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা জালাল আহমদ চৌধুরী জানান, এবারের সম্মেলনে সরওয়ার জাহান চৌধুরী সভাপতি প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে আলাপ করা হলে উপজেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, সভাপতি/সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ার তার কোন স্বদিচ্ছা নাই। তবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ইচ্ছার প্রতিফলন ও জেলা কমিটির সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে সভাপতি/সম্পাদক কে হবেন। এ সম্মেলনে ৮টি সাংগঠনিক ইউনিয়নের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদবীর ২৪ জন, উপজেলা কমিটির ৭১ জন সদস্য কাউন্সিল হিসাবে মতামত বা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন পর উখিয়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে উক্ত দল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ লোকজনের মাঝে একটি উৎসাহ দেখা দিয়েছে। তবে সাধারণ লোকজন ও নেতাকর্মীরা আশা করেন, আওয়ামীলীগের শক্ত সাংগঠনিক শক্তির সাথে রাজপথে সাহসের সাথে আন্দোলন, সংগ্রামে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে সফল করতে হলে শিক্ষিত, সৎ ও সাহসী নেতৃত্বকে উপজেলা বিএনপি’র কমিটিতে স্থান দিতে হবে। তবে আগামী সম্মেলন ও কাউন্সিলে এটা অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে তাদের অভিমত।