কক্সবাজারে কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড গরম পড়েছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। পাশাপাশি আকাশে কড়া সূর্য থাকায় অতিষ্ঠ জনজীবন। এতে কর্মক্ষেত্রে নেমে এসেছে স্থবিরতা, অস্বস্তিতে রয়েছেন শ্রমজীবীরা। জেলা সদর হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীন মো. আবদুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ ধরে গরমের প্রভাবে রোগী ভর্তির হার বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২০০ জন শিশু ও বয়স্ক রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা বেশি। দুই দিনে ৫১১ রোগী সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তিনি বলেন, রোগ থেকে রক্ষা পেতে বিনা কারণে বাইরে না যাওয়া, প্রচুর পরিমাণে পানি পান, ফলের রস পান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ভাইরাসজনিত জ্বর, ডায়রিয়া, সর্দি-কাঁশি শিশুদের বেশি আক্রমণ করছে। এছাড়া হিটস্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেশি রয়েছে। তাই গরমে বাইরে বের না হওয়াই ভাল। এছাড়া গরমের আগে জরুরি কাজ শেষ করা উত্তম।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. আবদুল মতিন বলেন, এখন গরমের কারণে রোগের প্রভাব বেশি। বিশেষ করে গরমে রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া বেড়ে যায়। তাই হাসপাতালে আসতে হয়। তবে ভয়ের কিছু নেই। ডায়রিয়া হলে ঘন ঘন খাবার স্যালাইন খেতে দিন। এছাড়া শ্বাসকষ্ট ও জ্বরের প্রভাব বেশি হওয়া স্বাভাবিক। রোগ প্রতিরোধে স্বাভাবিক খাবার ছাড়া বাইরের খাবার খাওয়ানো যাবে না, গরম ও রোদের তাপ থেকে শিশুদের মুক্ত রাখতে হবে। যত সম্ভব শিশুদের ঠান্ডা জায়গায় রাখা, বুকের দুধ পান করানোর আগে স্তনের বোটা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এছাড়া পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে শিশুদের যত্ন নিতে হবে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, সাতদিন ধরে প্রকৃতিতে তাপমাত্রা বেড়েছে। চৈত্র মাসের শেষে ও বৈশাখের শুরু থেকে সূর্যের তাপ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। শুক্রবার কক্সবাজারে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার সব্বোর্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সোমবারের সব্বোর্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জীবনযাত্রা। শিশু ও বয়স্ক মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখি কষ্টে দিন অতিবাহিত করছে।
তিনি আরো বলেন, সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে গরমের তীব্রতা বেড়েছে। চার থেকে পাঁচদিনের মধ্যে নিম্নচাপ কমে গেলে তাপমাত্রা কমে যাবে।