মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে দিয়ে ১২৫ দিন ধরে কাঠ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে কাঠ খালাসে থাকা শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।
স্থলবন্দরে নাফ নদীতে কাঠ খালাস করতে চারটি জেটি রয়েছে। কাঠের কার্গো ট্রলার না আসায় এসব জেটি খালি পড়ে আছে। মাঠে মজুদ নেই তেমন কাঠের গুঁড়ি। দেখা মিলেনি কাঠ খালাসের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদেরও। তবে আচার, শুটকি ও হিমায়িত মাছের কার্গো ট্রলার থেকে শ্রমিকেরা মালামাল খালাস ও ট্রাকে বোঝাই করতে দেখা গেছে।
শ্রমিক নেতা মাঝি বলেন, মিয়ানমার থেকে কাঠ না আসায় প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক শ্রমিকরা টানা চার মাস বেকার। কাঠ না আসায় শ্রমিকেরা বন্দরে আসেন না।
ব্যবসায়ী সেলিম বলেন, মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশ্বাসের উপর ব্যবসা করা হচেছ।তাদের সঙ্গে চুক্তি নেই। মালামাল আনতে সেদেশের ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা দিতে হচ্ছে। বাণিজ্য বন্ধ হলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা চিন্তায় পড়েন। কখন সমস্যার সমাধান হবে জানি না। এর মধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কয়েকশত কোটি টাকা মিয়ানমারে আটকা পড়ে আছে। মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, হঠাৎ সেনাবাহিনীর অভিযানে ব্যবসায়ীরা পালিয়েছেন। তাই তারা কাঠ পাঠাতে পারছেন না।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনে সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, কাঠ আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। অন্যান্য পণ্য সামগ্রী আসলেও ১২৫ দিন ধরে কাঠ আমদানি বন্ধ রয়েছে। জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত কাঠ আমদানি করে দুই কোটি ৭২ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হয়েছিলো। সরকারের উচ্চ পর্যাযে বৈঠক করে দ্রুত সমস্যার সমধান করা হউক।
স্থলবন্দরের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েক মাস আগে মিয়ানমারে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের পর টেকনাফে কাঠ আসা বন্ধ হয়। তবে এটি তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। কাঠ না থাকায় পুরো স্থলবন্দর ফাঁকা হয়ে পড়েছে।
স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা মো. ময়েজ উদ্দিন বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে টানা ১২৫ দিন কাঠ আমদানি বন্ধ রয়েছে। কাঠ আমদানি বন্ধ থাকায় কয়েক মাসের লক্ষ্যমাত্রায় ঘাটতি যাচ্ছে। এর মধ্যে দৈনিক কাঠ থেকে সাত লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। ৪ জানুয়ারি মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে রাখাইনে বৌদ্ধ বিদ্রোহীরা সেদেশের চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালায়। এ হামলায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সাতজন সদস্য নিহত হন। এরপর থেকে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করেন।