মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কতিপয় সদস্য, পুলিশের গুটিকয়েক অসাধু কর্মকর্তা ও কতিপয় অর্থলোভী রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতার যোগসাজসে কক্সবাজার পৌরসভার শতাধিক স্পটে নিয়মিত চলে মাদকের বিকিকিনি ও সেবন। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বসে মাদক বিক্রির জমজমাট হাঁট ।
এর মধ্যে শহরতলীর নাজিরারটেক ফদনার ডেইল এলাকার রোজিনা ভয়ংকর এক মাদক সম্রাজ্ঞীর নাম। এই মাদক সম্রাজ্ঞীর সাথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তার সাথে গভির সম্পর্কের কারণে পুরো এলাকা আতংকিত। প্রশাসনকে হাতে নিয়ে রমরমা করে তুলেছে মাদক স্পট। রোজিনার বিরুদ্ধে অপহণ করে টাকা আদায়, প্রশাসন ও বখাটেদের ম্যানেজ করে অন্যের জমি দখল সহ এহেন অপরাধ নেই যা সে করেনা। শহরের সবচেয়ে বড় ইয়াবার হাঁট রোজিনার।
বড়বাজারস্থ পূর্ব মাছবাজার এলাকায় শীর্ষ মাদক সম্রাজ্ঞী লাছেংপ্রু (প্রকাশ চশমানী)’র ইয়াবার শহরের বৃহৎ এই মাদকের হাটে প্রকাশ্যে বিভিন্ন প্রকারের মাদক কেনা-বেচা হলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোন প্রকার ভয়-ভীতি নেই। এসব মাদক ব্যবসায়ীদের সাফ কথা, ‘আমরা পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাসিক টাকা (পেমেন্ট) দিয়ে ব্যবসা করি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পশ্চিম বাহারছড়া এলাকার মো: আলী, কেরামত আলী, টেকপাড়া চৌমুহনী এলাকার ফজল হাজির ছেলে হাসান প্রকাশ বর্মাইয়্যা হাসান, চাউল বাজার এলাকার জমজমাট মাদক ব্যবসায়ী মমতাজ বেগম ও তার স্বামী নাসির উদ্দিন রুনু, বইল্যা পাড়ার বেবি, টেকপাড়ার আবছার, টেকপাড়ার মাদক স¤্রাট বাপ্পি, পাবেলসহ রয়েছে শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী। একই সিন্ডিকেটে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে মাদক ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া কয়েকজনের নাম জানা গেছে।
পূর্ব মাছ বাজার এলাকার বাসিন্দা ছেনুর মা, মাদক সম্্রাজ্ঞী মাকিসা রাখাইন, মাদক সম্্রাজ্ঞী উশামে রাখাইন, মাদক সম্রাজ্ঞী পিংকী রাখাইন, মাদক স¤্রাজ্ঞী আবুতুনী রাখাইন, মদক স¤্রাজ্ঞী উমাচিং রাখাইন (প্রকাশ লাকী), অংচজ, মাছেংলা, উদু রাখাইন (প্রকাশ মালা)। ফেরতী, ছেনু, ধানী রাকাইন, সবু রাখাইন, মোঃ শফিক, মোহাম্মদ আলী, খোরশেদ, পোমাসী রাখাইন, কিনছেনু রাখাইন (প্রকাশ সুন্দরী), পানখোরী, ওমাপ্রো, ছেনুর মার ছেলে কিং প্রকাশ বাবুল, চশমানির মেয়ে আম্মা রাখাইন, চেও রাখাইন, লালা রাখাইন সহ অনেকেই প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসার পরিচালনা করছে।
বড়বাজার পশ্চিম রাখাইন পাড়ার মোঠানীর মেয়ে মাসু রাখাইন, শামা রাখাইন সহ আরো অনেকে।
শহরের চোলাই মদ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন, নুরুল ইসলাম বাদশা প্রকাশ মদ বাদশা, শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বেলালসহ মূখোশধারী আরো অনেক ব্যক্তি।
যাদের বেশিরভাগের’ই রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। তারা আটক হচ্ছে আর ক’দিন পরে ছাড়া পাচ্ছে এবং পুনরায় মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। তারা এ ব্যবসা করে বিশাল দালান, গাড়িসহ বহু সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন।
শহরের এসব মাদক ব্যাবসায়ীদের সাথে কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের অনৈতিক আর্থিক লেনদেন থাকায় কোন প্রকার অভিযান চালানো হচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে পুলিশ, আনসার ও খোদ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তাই মাদক ব্যবসায়ী।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর কক্সবাজার এর সহকারী পরিচালক সোমেন মন্ডল বলেন, রাখাইনপাড়া সহ শহরের যেসব জায়গায় মাদক বিক্রয় করা হয় ওসব এলাকায় একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। আটক করা হয়েছে অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে। তবে জনবল সংকট থাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনায় বেগ পেতে হচ্ছে। তবে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কক্সবাজার সহকারী পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসন বরাবরই কঠোর অবস্থানে। আর মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যে বা যারা মাদকের সাথে জড়িত রয়েছে তাদের কেউ পারপাবেনা আইনের হাত থেকে। দৈনিক গণসংযোগ