হজযাত্রীদের সৌদি আরবে গিয়ে এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশনের ঝামেলা আর পোহাতে হবে না। এখন থেকে বাংলাদেশেই সম্পন্ন করা হবে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা। গতকাল শুক্রবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এ তথ্য জানান।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সফররত সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। উভয়পক্ষ বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সৌদি আরবের পরিবর্তে ঢাকাতেই সম্পন্নের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পারস্পরিক সর্বাত্মক সহযোগিতার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এখানকার নিয়মে বাংলাদেশ বিমানের যাত্রীরা আশকোনা হজ ক্যাম্পে এবং সৌদি এয়ারলাইনসের যাত্রীরা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন করেন। আসন্ন হজেও একই নিয়মে তারা হজক্যাম্প ও শাহজালালে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সারবেন। এর পর উভয় বিমানের হজযাত্রীদের শাহজালাল বিমানবন্দরের
একটি এক্সক্লুসিভ জোনে নিয়ে যাওয়া হবে। সৌদির জেদ্দায় যে ইমিগ্রেশনের কাজ হতো, তা ওই এক্সক্লুসিভ জোনেই সম্পন্ন করা হবে। এই এক্সক্লুসিভ জোনের সব কার্যক্রম থাকবে সৌদি আরবের নিয়োজিত টেকনিক্যাল
টিমের হাতে। দুই ধাপের ইমিগ্রেশন শেষ করে হজযাত্রীরা ফ্লাইটে উঠবেন। সৌদিতে পৌঁছে আর ইমিগ্রেশনের ঝামেলা থাকবে না। ফলে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জেদ্দা বিমানবন্দরে ৬-৭ ঘণ্টা অপেক্ষার বিড়ম্বনা লাঘব হবে।
শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ঠিকঠাক সম্পাদনে এবার হজ ভিসার জন্য দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার আগেই দেশের আট বিভাগের প্রত্যেক হজযাত্রীর ১০ আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করা হবে। এবার আর হজযাত্রীদের কোনো অসুবিধার মুখোমুখি হতে হবে না। অন্যবারের থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে এবার বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। তারা কষ্ট পাবেনÑ এটি আমরা কিছুতেই হতে দেব না।
সৌদি হজ মন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটা বাড়ানোর বিষয়টি রয়্যাল কেবিনেটে উপস্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে ধর্মসচিব আনিসুর রহমান জানান, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর দিয়ে গেলে বা শিডিউল ফ্লাইটে যারা হজ করতে যাবেন, তারা এই ইমিগ্রেশন সুবিধা পাবেন না। শুধু হজ ফ্লাইটের যাত্রীরা ঢাকায় সৌদি অংশের ইমিগ্রেশন করতে পারবেন। সময় হাতে রেখেই শাহজালাল বিমানবন্দরের এক্সক্লুসিভ জোনে এই ইমিগ্রেশন শেষ করা হবে, যাতে ফ্লাইট বিলম্ব না হয়। অচিরেই দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের ডিসি অফিসে হজযাত্রীদের আঙুলের ছাপ সংগ্রহের জন্য বিশেষ কর্নার খোলা হবে। সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ আগস্ট হজ হতে পারে।শেয়ার ফেসবুক