রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এনজিওতে স্থানিয়দের চাকরির দাবি সম্পুর্ন যৌক্তিক ও যুগোপযোগী। এই আন্দোলনের ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অনেক তথ্য সংগ্রহের সুযোগ হয়েছে যা এতোদিন কোন পরিকল্পনায় ছিল না। স্থানিয়দের এনজিওর চাকরিতে অগ্রাধিকার দিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জব ফেয়ার বা চাকরির মেলা করা হচ্ছে। তবে স্থানিয়দের আন্দোলন অবশ্যই শান্তিপূর্ন ও নিয়মতান্ত্রিক হতে হবে বলে মত দিয়েছেন রোহিঙ্গা ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, এনজিও সংস্থার প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ বেতার ও বিবিসি মিডিয়া এ্যাকশন এর যৌথ উদ্যোগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে আয়োজিত এক সংলাপ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই এসব মতামত দেন।
একই সাথে রোহিঙ্গাদের ঘিরে কক্সবাজার অঞ্চলে যেন কোন ধরনের বিশৃংঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে বলে এই সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তব্যে উঠে আসে। সংলাপে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আসার কারনে স্থানীয়দের কি কি সমস্যা হচ্ছে এবং সে সব নিয়ে উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। সংলাপে অতিরিক্ত ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও তে স্থানীয়দের চাকরি প্রদানে প্রাধান্য দেয়ার বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় এনজিওগুলো উদ্যোগ গ্রহন করছে যাতে করে সঠিক প্রক্রিয়ায় স্থানীয়দের চাকরি প্রদান করা যায়। সম্প্রতি চাকুরী প্রত্যাশি স্থানীয়দের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
একই সাথে প্রত্যেক এনজিওতে ক্যাটাগরি ভিত্তিতে তাদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জেলা ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ তালিকাও প্রদানের নির্দেশ দেন কর্মকর্তা।
সংলাপে এনজিওতে চাকরির দাবিতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, এনজিওদের সাথে স্থানিয়দের কোন বিরোধ নেই। কেউ কেউ এই নিয়ে বিভিন্ন প্রপাকান্ড ছড়িয়ে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। তাই এসব সমস্যা নিরসনে স্থানিয় যুবকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি নিশ্চিত করার দাবি করেন। সংলাপ অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসারুর আফসার বলেন, স্থানিয়দের আন্দোলন যৌক্তিক ও যুগোপযোগী। এই আন্দোলনের ফলে অনেক অজানা বিষয় উঠে এসেছে।
এনজিওতে স্থানিয়দের চাকরির জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকল এনজিওর সমন্বয়ে জব ফেয়ার বা চাকরির মেলা করার কথা জানান তিনি। তবে স্থানিয়দের আন্দোলনকে অবশ্যই অহিংস ও শান্তিপূর্ন করার কথা বলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আফসারুল আফসার।
সংলাপে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরির দাবিতে স্থানিয়দের আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে।
সংলাপে এনজিও ফোরামের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবি এ কলামিস্ট এডঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, কক্সবাজার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের পক্ষে কলিম উল্লাহ, নাজিম উদ্দিন, এইচ এম নজরুল, অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি উখিয়ার আহবায়ক শরিফ আজাদ সহ কক্সবাজারের সুশীল সমাজের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।