ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক :
গুলশান হামলা পরিচালনাকারী জঙ্গি দলের সদস্য রোহান ইমতিয়াজ আওয়ামী নেতা ইমতিয়াজ খান বাবুলের পুত্র, এবং বাবুল ঢাকা মহানগর উত্তরে গত বছর অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন।
গুলশান হামলার পর সাইট ইন্টেলিজেন্স হামলাকারী হিসেবে যেসব জঙ্গিদের ছবি প্রকাশ করে সেখান থেকে রোহানের পরিবারের এক ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে তার পরিচিতজনরা। জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের ছবির সঙ্গে বেরিয়েও আসে তার পারিবারিক তথ্যও।
শুলশান হামলায় জঙ্গি দলের ৭ জনের মধ্যে ৬ জন মারা যায়, এবং মৃত এ ৬ জনের মধ্যে রোহান ইমতিয়াজও ছিল।
ইমতিয়াজ খান বাবুল নিজেও ছেলের সঙ্গে তার ছবি প্রকাশ করেছিলেন এ বছরের ২১ জুন, যেখানে তিনি গত বছরের একই দিনে পোস্ট করা এক ছবি প্রকাশ করে লিখেন, “বাবা কোথায় তুমি, প্লিজ ফিরে এসো”।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জঙ্গি রোহানের বাবা ইমতিয়াজ খান বাবুল মহানগরীর ৩১ নং (সাবেক ৪৪) ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের মনোনিত কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন, এবং নির্বাচনে তার প্রতীক ছিল “রেডিও”।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক এমপি মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরে বাংলানগর এলাকার ভোটারদের প্রতি ইমতিয়াজকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এক খোলা চিঠিও দিয়েছিলেন। এবং ২৩ এপ্রিল সে খোলা চিঠি ইমতিয়াজ খান বাবুলের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়।
ইমতিয়াজ খান বাবুলের নির্বাচনী লিফলেটের তথ্য অনুযায়ি তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ফিবার রেফারি।
রোহানের মা স্কলাশটিকা স্কুলের একজন শিক্ষিকা, মা-বাবার একমাত্র পুত্র সন্তান রোহানের দুই বোন আছে, এবং তারা মোহাম্মদপুরে বসবাস করেন বলে জানা গেছে।
জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের বাবা ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ইমতিয়াজ খান বাবুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি।
উল্লেখ্য, ঢাকার কূটনীতিকপাড়া গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে একদল অস্ত্রধারী ঢুকে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর শনিবার সকালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয় নিরাপত্তা বাহিনী। এ ঘটনায় ৯ জন ইতালিয়ান, ৭ জন জাপানি, ৩ জন বাংলাদেশি এবং ১ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হন।
আইএসপিআর জানিয়েছে, গুলশানের ওই রেস্তোরাঁ থেকে ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার এবং ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে ১৭ জনই বিদেশি।
ওই হামলায় জড়িত দাবি করে সাইট ইন্টিলিজেন্স যে পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করেছে সেগুলোর সত্যতা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা যায়নি।
এই হামলায় জড়িতদের পাঁচজন চিহ্নিত জঙ্গি বলে পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক ইতোমধ্যে বলেছেন। তাদের খোঁজা হচ্ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সুত্র-সিলেটটুডে