ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী আর নেই। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স হাসপাতালে (এইএমএস) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বাজপেয়ীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। তিনবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বাজপেয়ীর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ৯ সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাজপেয়ী। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল তাকে হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
জানা গেছে, গত ১১ জুন কিডনি সংক্রামণ, মূত্র ত্যাগে জটিলতা, শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে এইমস হাসপাতালে ভর্তি হন বাজপেয়ী। তিনি ডায়াবেটিকেও ভুগছিলেন। একটি কিডনিতে চলছিল তার শরীর। ২০০৯ সালে স্ট্রোক করে ডিমনেশিয়া রোগে আক্রান্ত হন বাজপেয়ী।
ভারতের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে আজ দুপুরে হাসপাতালে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার সঙ্গে ছিলেন বিজেপি সাভাপতি আমিত শাহ। এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে মোদি তাকে হাসপাতালে দেখতে যান।
১৯২৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন অটল বিহারী বাজপেয়ি। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড় আন্দোলনের সময় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে ১৯৯১, ১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯, ও ২০০৪ সালে লহ্মনৌ লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির সাংসদ নির্বাচিত হন এই রাজনীতিক। রাজ্যসভারও সাংসদ ছিলেন তিনি।
১৯৯৬ সালে মাত্র ১৩ দিনের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন বাজপেয়ী। এরপর ১৯৯৮ সালে ফের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০০৪ পর্যন্ত সেই দায়িত্বে ছিলেন।অ-কংগ্রেস রাজনীতিবিদ হিসাবে ভারতে বাজপেয়ী প্রথম ও একমাত্র নেতা যিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুরো মেয়াদ শেষ করেছেন। এ ছাড়া ভারতের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি জাতিসংঘে হিন্দিতে ভাষণ দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ দেশটির সর্বোচ্চ সম্মান ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হয় বাজপেয়ীকে। তাকে সম্মান জানাতে ২০১৪ সাল থেকে বাজপেয়ীর জন্মদিনটিকে ভারত সরকার ‘গুড গভর্নেন্স ডে’ হিসেবে পালন করে আসছে।