1. arif.arman@gmail.com : Daily Coxsbazar : Daily Coxsbazar
  2. dailycoxsbazar@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  3. litonsaikat@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  4. shakil.cox@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  5. info@dailycoxsbazar.com : ডেইলি কক্সবাজার : Daily ডেইলি কক্সবাজার
সার্ফারদের সংগ্রামের গল্প - Daily Cox's Bazar News
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন
নোটিশ ::
ডেইলি কক্সবাজারে আপনার স্বাগতম। প্রতি মূহুর্তের খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
সংবাদ শিরোনাম ::
কট্টরপন্থী ইসলামী দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ: এসএডিএফ কক্সবাজারের আট তরুণ তরুণীকে ‘অদম্য তারূণ্য’ সম্মাননা জানাবে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি Job opportunity বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়না, নাকি স্বপ্নের দেশ! আল-আকসা মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনা বন্ধের আহ্বান আরব লীগের পেকুয়ায় পুলিশের অভিযানে ৮০ হাজার টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার-১ পেকুয়ায় অস্ত্র নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল : অস্ত্রসহ আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটন টেকনাফে একটি পোপা মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা ! কক্সবাজারের টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক-১ নিউ ইয়র্কে মেয়র কার্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে কনসাল জেনারেলের আলোচনা

সার্ফারদের সংগ্রামের গল্প

ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৮
  • ২৭৪ বার পড়া হয়েছে

সাগরের স্বচ্ছ নীল জলে নেই ধারালো কোনো প্রবাল। ভয় নেই সামুদ্রিক ভয়ঙ্কর প্রাণীর। রয়েছে প্রবল স্রোতের বাঁধভাঙা ঢেউ। এসব সুবিধায় কক্সবাজার এখন সার্ফিংয়ের জন্য বিশ্বের অন্যতম আদর্শ স্থান।

উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন সৈকতে বহু আগে থেকে সার্ফিং চালু থাকলেও বাংলাদেশে সার্ফিং শুরু ১৯৯৬ সালে। তারও অনেক পরে ২০০৯ সালে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় একটি প্রতিযোগিতা। হাতেগোনা কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড় এতে অংশ নিয়েছিলেন। হাঁটি হাঁটি পা-পা করে এ বছরের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ সার্ফিং প্রতিযোগিতা। কক্সবাজারে সার্ফিং নিয়ে এখন বেশ সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্ব সার্ফাররা। এই সম্ভাবনার কথা বলছেন পর্যটকরাও। রোমাঞ্চকর জলনৃত্য উপভোগ কিংবা সৈকতে আসা পর্যটকদের চিত্তবিনোদনের খোরাক কেবল নয়, সমুদ্রে গোসল করতে নামা মানুষের জীবন রক্ষার কাজও করছেন সার্ফাররা। অর্ধশত সার্ফার এখন কক্সবাজারকে বিশ্বে পরিচিত করতে নিজেদের শ্রম ও মেধা উজাড় করে দিচ্ছেন।

চলতি বছরের ২৬ থেকে ২৮ এপ্রিল কক্সবাজার সৈকতের লাবণী পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা। দেশি ও বিদেশি অর্ধশত সার্ফার এতে অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জন নারীও ছিলেন। প্রতিযোগিতায় নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন রিফা আক্তার। ছেলেদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন সাগর হোসেন।

নারী সার্ফার রিফা আক্তার বলেন, ‘সার্ফিং আমাকে অনেক উৎসাহ জোগাচ্ছে। এখানে থেমে থাকতে চাই না। বিদেশে গিয়ে সার্ফিং করার স্বপ্ন দেখছি।’

পুরুষদের মধ্যে সেরা সার্ফার সাগর হোসেন বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, একদিন আমরা বিশ্ব জয় করব। সে দিনের স্বপ্ন নিয়ে সার্ফিং করে যাচ্ছি। আশা করি, বিদেশে গিয়ে ভালো কিছু করতে পারব।

১৯৯৬ সালের কোনো একদিন কয়েকজন বিদেশি সার্ফিং বোট নিয়ে কক্সবাজারের উত্তাল তরঙ্গে দোল খেতে নামেন। দেখে অভিভূত হয়েছিলেন স্থানীয় কিশোর জাফর আলম। বিদেশি এই সার্ফার দলের নেতৃত্বে ছিলেন টম বাওয়ার। উৎসাহী জাফর কৌতূহল মন নিয়ে এগিয়ে গেলেন বাওয়ারের কাছে। আদরে তিনি কাছে টেনে নিলেন কিশোরকে। এর পরের গল্প আরও চমৎকার। অভিভূত কিশোরকে সার্ফিংয়ে হাতেখড়ি দিলেন বাওয়ার। শখ করে সার্ফিং শিখতে গিয়ে এখন বিশ্ব আইকন জাফর আলম। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা মাতিয়ে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশের প্রথম এই সার্ফার।

প্রশিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক সার্ফার তৈরি করেছেন জাফর।

ঢেউকে জয় করার অদম্য সাহস নিয়েই কাজ করছে কক্সবাজার সার্ফিং ক্লাব। সার্ফিং দ্য নেশনের প্রেসিডেন্ট টম বাওয়ারের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে এই ক্লাব। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে শতাধিক সার্ফার তৈরি হয়েছেন। বিদেশি সার্ফাররাও মুগ্ধ কক্সবাজারের অদম্য সাহসী কিশোর-কিশোরীদের সার্ফিং দেখে। অনেক বিদেশিও এখানে আসছেন প্রশিক্ষণ নিতে। টম বাওয়ারের পৃষ্ঠপোষকতায় কক্সবাজার সৈকতে প্রতিবছর আয়োজন হচ্ছে সার্ফিং প্রতিযোগিতা।

কক্সবাজার শহরতলির কলাতলী গ্রামের আমেনা বেগম ও নাসিমা আকতার, ঘোনারপাড়ার রাজু বেগম, বাহারছড়া এলাকার রিফা আকতারের মতো অন্তত ২৫ কিশোরী এগিয়ে এসেছে সার্ফিং শিখতে। দুরন্ত এই কিশোরীদের অনেকে সমুদ্রসৈকতে শামুক-ঝিনুক কুড়িয়ে তা দিয়ে মালা গাঁথত। পর্যটকদের কাছে এই মালা বিক্রি করেই চলত তাদের জীবিকা। এখন তারা সবাই কৃতী সার্ফার। উত্তাল ঢেউয়ের ছন্দে মাতিয়ে বেড়ায় এই কিশোরীরা। ঢেউয়ের সঙ্গেই মিতালি তাদের। তারা সবাই খেটে-খাওয়া দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হলেও এখন তাদের স্বপ্ন বিশ্বের নামকরা সার্ফার হওয়ার।

সার্ফার আমেনা বেগম জানালেন, সমুদ্রসৈকতে দেখতাম জাফর ভাই সার্ফিং করছেন। ঢেউয়ের ওপরে বোর্ড নিয়ে কীভাবে ভেসে বেড়াচ্ছেন! দেখে অবাক হতাম। কখনও বিশ্বাস করিনি, মেয়ে হয়ে নিজেই সার্ফিং করব। আজ তাই সম্ভব হয়েছে, জাফর ভাইয়ের কারণে। তিনি আমাকে প্রথম বিচে দেখে সার্ফিং করার কথা বলেন। রাজি হলে তিনি শিখিয়ে দেন কীভাবে সার্ফিং করতে হয়। আমার মতো আরও অনেক মেয়েকে তিনি সার্ফিং শিখিয়েছেন। জাফর ভাইয়ের দেখানো পথে এখন প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তারই শিষ্য রাশেদ ভাই। অনেক মেয়ে-সার্ফার তৈরি হয়েছে তাদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে, যারা এখন বিদেশে গিয়ে খেলার স্বপ্ন দেখছে।’

কক্সবাজার শহরে দরিদ্র পরিবারে জন্ম কিশোরী রিফা আক্তারের। সমুদ্রপাড়ে জন্ম, সমুদ্রের তীরেই বেড়ে ওঠা। এ বছরের সার্ফিং প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কৃতী সার্ফার রিফা আক্তার। এখন স্বপ্ন দেখছেন বিশ্বের সেরা সার্ফার হওয়ার। তিনি বলেন, ‘দরিদ্র ঘরের মেয়ে হয়ে আমি এখন যা করছি, অনেক ছেলেও তা পারে না। আমি বিশ্বকে দেখাতে চাই এই সার্ফিংয়ের মাধ্যমে। নিজের অদম্য ইচ্ছাই সার্ফার হতে সাহায্য করেছে। সার্ফিং করি বলে পাড়াতেও এখন আমার একটি আলাদা মর্যাদা, যা আগে কখনও ছিল না। এখন বন্ধুরা আমাকে সমীহ করে। আমি যখন বিচে বোর্ড নিয়ে নামি, ঢেউকে জয় করি, মানুষ তখন অবাক হয়ে আমার দিকে তাকায়। বিস্ময়ের চোখে দেখে একটা মেয়ে হয়ে কীভাবে তা পারছি।’

শুধু রিফা আক্তার বা নাসিমা আকতার নয়, কক্সবাজার সার্ফ ক্লাবের সবাই একই কথা শোনালেন। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারকে বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখেন তারা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2020 Dailycoxsbazar
Theme Customized BY Media Text Communications