গেল বছরের নভেম্বরে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয়রত রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মভুমি ফিরে যাওয়ার কথা । কিন্তু সেখানে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া, আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ও রোহিঙ্গাদের অনীহা সহ নানা কারণে সেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। আর এরই মধ্যে দেশে গঠিত হয়েছে নতুন সরকার। এ নতুন সরকারের কাছে কক্সবাজারবাসীর একটাই দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হোক।
মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুুযায়ী গত বছরের নভেম্বরে তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব নিয়ে রোহিঙ্গাদের অনীহা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মিয়ানমারে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি না হওয়ার দাবি করায় বন্ধ হয়ে যায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম।
এদিকে উখিয়া-টেকনাফে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা বসবাসের কারণে নানাবিধ সমস্যায় পড়েছে স্থানীয় সাধারন মানুষ। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
১৯৯২ সালেও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার নাটক সাজিয়ে ছিল। এবারেও তারা একই পন্থায় কাজ করছে। আর সে জন্য নতুন সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, যাচাই-বাছাইয়ের পর তালিকাভুক্ত ২ হাজার ২শ ৬০ জন রোহিঙ্গার মধ্যে প্রথম দফায় গত বছরের ১৫ নভেম্বর দেড়শ’ জনকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু যা আজও হয়ে উঠেনি।
দীর্ঘ ১৬ মাস পেরিয়ে যাচ্ছে। এখনো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আলোরমুখ দেখছে না। এরই মধ্যে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন অপরাধেও জড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যাবাসনের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। অন্যথায় এ সংকট দীর্ঘ হবে।
২০১৭ সালের ২৪ আগষ্টের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ৩০টি ক্যাম্পে তারা অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।