স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : জেলার ৫টি উপজেলা রামু, উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও পেকুয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। পেকুয়ায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বাদে ৪ উপজেলায় অনেকটা সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি হতাশাজনক। উখিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগে নির্বাচিত হওয়ায় এখানে শুধুমাত্র পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হয়েছে। তৃতীয় ধাপে রবিবার (২৪ মার্চ) অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে সব উপজেলায় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের হারিয়ে জয় পেয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীরা। তাতে প্রমাণিত হলো- প্রতীক নয় ভোটের মাঠে ফ্যাক্টর জনগণ ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। রামু উপজেলা পরিষদের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মর্যাদার লড়াইয়ে জিতেছেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল। তিনি পেয়েছেন মোট ৩১২৩৮ ভোট। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রিয়াজ উল আলম পেয়েছেন ২৯৪৯২ ভোট। তার চেয়ে ১৭৪৬ ভোট বেশি পাওয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সোহেল সরওয়ার কাজলকে ‘চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত’ ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পেকুয়ার ৪০টি ভোট কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭০৭৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম পেয়েছেন ১২৬৬৯ ভোট। অপর বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এসএম গিয়াস উদ্দিন আনারস প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৮৭১৬ ভোট। বিজয়ী প্রার্থীর সাথে দ্বিতীয় স্থানে থাকা নৌকা প্রতিকের মধ্যে ব্যবধান রয়েছে ৪৪০৮ ভোট। মহেশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব মোঃ শরীফ বাদশা। মহেশখালী উপজেলার ৭৪ টি ভোটকেন্দ্রের প্রাপ্ত বেসরকারীভাবে ফলাফলে আনারস প্রতীক নিয়ে মোঃ শরীফ বাদশা পেয়েছেন ৩২ হাজার ৫ শত ৩৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ হোছাইন ইব্রাহিম পেয়েছেন ২৬৭৩৩ ভোট। তাদের মধ্যে ভোটের ব্যবধান ৫৮০৫। টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ৫৫টি ভোটকেন্দ্রে বিশাল ভোটের ব্যবধানে মোটর সাইকেল প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আলম। তার প্রাপ্ত ভোট ৩৭২৯৯। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক এমপি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২৪০৫১ ভোট। অপর বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাফর আহমদ আনারস প্রতীক নিয়ে ১৬৪৭৪ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। নির্বাচিত নুরুল আলমের সাথে নিকটতম প্রার্থী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর ব্যবধান ১৩২৪৮ভোট। রবিবার রাত ১১টার দিকে বেসরকারী ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার রবিউল হাসান। টেকনাফে একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়মে মোট ভোটার সংখ্যা ১৪৫৮০৮ জন। ভোটকেন্দ্র সংখ্যা ৫৫টি। উল্লেখ্য, বিদ্রোহীদের কাছে হেরে যাওয়া প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন বর্তমান চেয়ারম্যান। তারা হলেন- রিয়াজ উল আলম (রামু), মোহাম্মদ হোছাইন ইব্রাহিম (মহেশখালী), জাফর আহমদ (টেকনাফ)।