1. arif.arman@gmail.com : Daily Coxsbazar : Daily Coxsbazar
  2. dailycoxsbazar@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  3. litonsaikat@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  4. shakil.cox@gmail.com : ডেইলি কক্সবাজার :
  5. info@dailycoxsbazar.com : ডেইলি কক্সবাজার : Daily ডেইলি কক্সবাজার
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কোন পথে - Daily Cox's Bazar News
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
নোটিশ ::
ডেইলি কক্সবাজারে আপনার স্বাগতম। প্রতি মূহুর্তের খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
সংবাদ শিরোনাম ::
কট্টরপন্থী ইসলামী দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ: এসএডিএফ কক্সবাজারের আট তরুণ তরুণীকে ‘অদম্য তারূণ্য’ সম্মাননা জানাবে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি Job opportunity বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়না, নাকি স্বপ্নের দেশ! আল-আকসা মসজিদে ইহুদিদের প্রার্থনা বন্ধের আহ্বান আরব লীগের পেকুয়ায় পুলিশের অভিযানে ৮০ হাজার টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার-১ পেকুয়ায় অস্ত্র নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল : অস্ত্রসহ আটক শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটন টেকনাফে একটি পোপা মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা ! কক্সবাজারের টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক-১ নিউ ইয়র্কে মেয়র কার্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে কনসাল জেনারেলের আলোচনা

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কোন পথে

ডেইলি কক্সবাজার ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ৩৫০ বার পড়া হয়েছে

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মিয়ানমারের ব্যর্থতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা হলেও ভারত সরকার সমর্থনের পৈতা ধরেই রেখেছে। এর কারণ ভারত চায় মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে। এটা নয়াদিল্লির ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’ বাস্তবায়নেরই অংশ। সাম্প্রতিক সময়ে দেশ দুটির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ছে ব্যাপক হারে। মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। কী সেনা আমল, কী গণতান্ত্রিক আমল, সব সময়ই এ সম্পর্ক অটুট ছিল। বলা যায়, মিয়ানমারের পরীক্ষিত বন্ধু চীন। উত্তর কোরিয়া হাজার অন্যায় করেও যেমন সমর্থন পায় চীনের, মিয়ানমারও তেমনি সব কাজে চীনের ভালোবাসা পেয়ে থাকে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ একাধিকবার রাখাইন প্রদেশের অবস্থা নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েও শুরু করতে পারেনি শুধু চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতায়।

গত অক্টোবরে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিধনের ঘটনায় জাতিসংঘ তদন্তে এলেও সরকার ও সেনাবাহিনী সমর্থন জানায়নি, কোনো সহযোগিতা করেনি। কিন্তু চীন মনে করে, মিয়ানমার যা করেছে ঠিক করেছে। মিয়ানমারকে সাম্প্রতিক সময়ে চীনের কূটনৈতিক সুরক্ষা দেওয়ার একাধিক কারণও রয়েছে। রাখাইন রাজ্যের কিয়াকফু এলাকায় বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করতে চায় চীন। অবস্থান জোরদার করতে চায় ভারত মহাসাগরে। শুধু তা-ই নয়, গত এপ্রিলে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের বেইজিং সফরে দুই দেশের মধ্যে অশোধিত তেলের পাইপলাইন নির্মাণ নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। বেইজিং সম্প্রতি আরাকানি রাজনীতিবিদদের সে দেশে আমন্ত্রণ জানায়। তাদের একজন হলেন আরাকান ন্যাশনাল পার্টির চেয়ারম্যান ড. আয় মং। কট্টর জাতীয়তাবাদী আয় মং অতিসম্প্রতি রাখাইন প্রদেশে সেনা মোতায়েন এবং ওই এলাকায় জরুরি অবস্থার দাবি জানান। তিনি রোহিঙ্গাবিরোধী মানুষ। রোহিঙ্গাদের ওপর এত অত্যাচার, নির্যাতন চলছে, তবু চুপ চীন। কাজেই রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশের জন্য সেই থেকে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো ঝুলে আছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সাত লাখের ওপর রোহিঙ্গা রয়েছে। সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়নের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। বিশ্ব মিডিয়া রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে না পারায় সেখানে ঠিক কী হচ্ছে তা বলা মুশকিল। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত অনুযায়ী, রাখাইন রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে সে দেশের সেনাবাহিনী ‘শুদ্ধি অভিযান’ চালাচ্ছে। এর ফলে প্রতিদিন রোহিঙ্গারা দলে দলে প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। রোহিঙ্গারা মূলত পাকিস্তানপন্থি। ১৯৪৮ সালে বৌদ্ধ ধর্মের দেশ বলে রোহিঙ্গারা পাকিস্তান ইউনিয়নে যোগ দিতে ব্যর্থ হয়ে তারা নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ওরা তখন বিশ্বব্যাপী ইসলামি বিপ্লবের লাইনে রওনা দিল। ফলে বেশ কয়েকটা মুজাহিদ গ্রুপের জন্ম হয়েছে, সন্ত্রাস করেছে, আত্মসমর্পণ করেছে। এই সন্ত্রাসী মুজাহিদদের দাবি কী ছিল? ওরা মুসলিম, ওরা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব মানে না, ওরা রাখাইন প্রদেশ নিয়ে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দিতে চায়। রোহিঙ্গাদের হামলায় মিয়ানমারের এথনিক বার্মিজরা সব সময় অতিষ্ঠ হয়ে থাকত। ২০১২ সালে যে ভয়াবহ রায়ট হলো সেটা শুরু করেছিল রোহিঙ্গারা। ২৮ মে মা থিডা টিয়ে’ নামে একজন রাখাইন নারীকে রোহিঙ্গা মুসলিমরা গ্যাং র্যাপ করে হত্যা করেছিল। সেটার পর অহিংস বৌদ্ধ তথা রাখাইনরা তাৎক্ষণিক ক্ষোভে আক্রমণ করে তাদের ওপর। সেখানেই বিষয়টি থেমে যেত, কিন্তু ৯ জুন ২০১২ মসজিদে নামাজের পর রোহিঙ্গা মুসলিমরা মংডু শহরে ব্যাপক আক্রমণ শুরু করে, যা ১০ জুন বেপরোয়াভাবে চলে রাখাইনদের ঘর-বাড়ির ওপর। ১১৯২টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। রাখাইনরা ও পুরো দেশ তাদের বিরুদ্ধে চলে গিয়ে রোহিঙ্গাদেরও ১৩৩৪টি ঘর পুড়িয়ে দেয়। রোহিঙ্গা মুসলিমরা বেশি বেপরোয়া ছিল মূলত মনে করেছিল, টিকতে না পারলে পেছনে বাংলাদেশের ভূমি আছে। সে জন্য ওরা কখনো আপসকামী হয়নি। ওরা সেদিন টিকতে না পেরে কয়েক লাখ বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর ১৯৭৮ সালে সামরিক শাসক জিয়ার সরকার মুসলিম বিশ্বে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সামরিক সরকারের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য জাতিসংঘের প্রস্তাবে বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেয়। বার্মা থেকে পালিয়ে আসা দুই থেকে আড়াই লাখ রোহিঙ্গা তখন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এই রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার ও উখিয়ায় উদ্বাস্তু হিসেবে জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক হাইকমিশন সহযোগিতা করতে শুরু করে। এর পর ১৯৯১-৯২ সালে খালেদা জিয়ার শাসনামলে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের আধাসামরিক বাহিনী নাসাকা এবং অন্য সম্প্রদায়ের সম্মিলিত আক্রমণের পর নতুন করে আবার প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মজার ব্যাপার হলো, বাংলাদেশে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে বলে জাতিসংঘ স্বীকার করে। অথচ কক্সবাজারের স্থানীয়দের মতে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৪ থেকে ৫ লাখের বেশি। বাস্তবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বর্তমানে ৭ লাখেরও বেশি। যারা বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছিল তাদের কর্মকা- কী? সত্তর দশকের শেষদিকে পাকিস্তানভিত্তিক ধর্মান্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি) বাংলাদেশের ধর্মান্ধ গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামী ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী যুদ্ধে মুজাহিদ হিসেবে নিয়োগ করে। আফগান ফেরত রোহিঙ্গা যোদ্ধারা পরবর্তী সময়ে রাখাইন প্রদেশে ঢোকে ও একাধিক জঙ্গি সংগঠন গড়ে তোলে। এই রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠনগুলো রাখাইন অঞ্চলে নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য নতুন করে আবার সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা করে। এসব সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এআরএনও) ও আরাকান লিবারেশন ফ্রন্ট (এএলএফ) জাতীয় বেশ কয়েকটি সংগঠন। যেগুলো আরাকান অঞ্চলে সশস্ত্র আন্দোলনের পাশাপাশি বেশিরভাগ কার্যক্রম পরিচালিত করে বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চল থেকে। মিয়ানমার সরকারের অভিযোগ হলো, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের বেনামি জঙ্গি সংগঠন জেএমবি, জেএমজেবি, হুজি এবং পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা, জইসী মুহাম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স) রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রশস্ত্রের জোগান দেয়। আর এদের অর্থ সহায়তা প্রদান করে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও তুরস্ক। ফলে এই রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠনগুলো সক্রিয়ভাবে মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলে নানা কিসিমের জঙ্গি অপারেশন পরিচালনা করে। তা হলে উপায় কী? সাধারণ রোহিঙ্গারা এই জাতিবিদ্বেষ ও ধর্মবিদ্বেষের শিকার হতেই থাকবে? এই ছিন্নমূল মানুষদের দেশে দেশে প্রত্যাখ্যান, যখন তারা খিদে তেষ্টায় মারা যাচ্ছেন তখনো রেহাই নেইÑ কোনো দেশই তাদের দায় নিতে চাইছে না। রাশিয়া থেকে চীন, মার্কিন দেশ থেকে আরব বিশ্ব সবাই মিয়ানমারের লোভনীয় সম্পদ ব্যবহারে আগ্রহী। বিনিয়োগে আগ্রহী। আগামী দশ বছরের মধ্যে মিয়ানমারে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। এমন একটা অবস্থায় ব্যবসাবান্ধব আন্তর্জাতিক রাজনীতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে কখনই চাপ দিতে চাইবে না বরং ক্ষমতাধর দেশগুলো রোহিঙ্গা ইস্যু ঝুলিয়ে রাখবে যাতে ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক (!), ব্যবসাবান্ধব আর সুখে অভ্যস্ত মিয়ানমারকে বাগে আনা সহজ হয়। সে জন্য চীন জানিয়ে দিয়েছে, জাতিসংঘে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উত্থাপনে তারা বাধা দেবে। পশ্চিমা বিশ্ব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মিয়ানামারের বাড়তি গুরুত্বের কারণ হলো বিশ্বশক্তি হওয়ার পথে দ্রুত ধাবমান চীন ও ভারতের অবস্থান এই অঞ্চলে। সঙ্গত কারণেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারত ও চীন উভয়েই তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তা ছাড়া মিয়ানামার ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর অভ্যন্তরে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে তেল-গ্যাসের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। দ্রুত প্রবৃদ্ধির ফলে জনশক্তি এবং ভোগ্যপণ্যের চাহিদাও এসব দেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম এবং মিয়ানমারে কৃষি উপযোগী জমির তুলনায় জনসংখ্যা কম হওয়ায় এ দেশগুলোতে বিপুল জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। ফলে ওইসব দেশে কৃষিক্ষেত্রে প্রচুর বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। কাজেই কী দরকার মিয়ানমার নিয়ে মাথা ঘামানোর? গত কয়েক মাসে রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর দিল্লি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তাদের মতে, রোহিঙ্গা ইস্যুটি অত্যন্ত জটিল। তাই এই ইস্যুতে ভারতের জড়ানোর ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত আর এমন নয় যে, ভারত মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠীর আচরণকে প্রভাবিত করার মতো সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। কাজেই যে কোনো ইস্যুতে তারা কেন ভারতের কথা শুনবে? কিন্তু রূঢ় বাস্তব হলো মিয়ানমারের নতুন শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার গুরুত্ব থেকেই দিল্লির এই নীরবতা। বঙ্গোপসাগর থেকে চীনকে দূরে রাখা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির ক্ষেত্রে মিয়ানমারের গুরুত্ব রয়েছে। তা ছাড়া ভারতের হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের মতো ঘটনার চেয়ে অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ইস্যুটি তার ভোটব্যাংককে কোনোভাবে প্রভাবিত করবে না। এ ছাড়া ভারতের নিরাপত্তার স্বার্থও রয়েছে, যা নির্ভর করছে মিয়ানমারের শাসকদের সদিচ্ছার ওপরও। ২০১৫ সালে মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর বহরের ওপর নাগা বিদ্রোহীদের হামলার ঘটনা ঘটে। এর পর ভারতীয় বাহিনী ইয়াঙ্গুনের নীরব সম্মতিতে মিয়ানমারের সীমান্তে গোপন অভিযান চালায়। ওই সমঝোতা ক্ষতিগ্রস্ত হোক ভারত তা চায় না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশে একটি মহল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোরও চেষ্টা করছে। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ছবি ছড়িয়ে বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রতি অনুকম্পা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি এবং তাদের মিত্ররা নানাভাবে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এবারও শুধু মানবিকতা দেখিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে নতুন করে সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ করার সুযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশ সব সময় রোহিঙ্গাদের মানবিক সহযোগিতা করেছে। ২০১২ সালে মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গার সময়ও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়েছে। আজও প্রতিদিন শত শত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশু ভিটেমাটি ছেড়ে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে, ডুবে মারা যাচ্ছে। শিশুদের নিথর দেহ বয়ে নিয়ে আসছেন স্বজনরা। জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের বাড়ি, পলায়নপর নারী-শিশুদের ওপর চালানো হচ্ছে নির্বিচারে গুলি। তবু নির্বিকার মাও সেতুংয়ের চীন ও মহাত্মা গান্ধির ভারত। নরেন্দ্র মোদির এই সফরের আগেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ আলোচিত হচ্ছে। শরণার্থীদের ব্যাপারে যে ভারতের নীতির কোনো বদল এখনো হচ্ছে না, সেটা জানিয়েছেন বিদেশ দপ্তরের যুগ্মসচিব। কাজেই রোহিঙ্গা সমস্যায় সবাই নীরব আছে ও থাকবে। দায় কার ওপর বর্তাচ্ছে? হ্যাঁ। শুধু বাংলাদেশের ওপর। কারণ পূর্বসূরিদের নির্বুদ্ধিতায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা আজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। আরও আসছে। আমরা জানি যে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সৃষ্ট মানবতাবিরোধী কর্মকা-, জঙ্গি হামলা, যুদ্ধ, অস্ত্র ব্যবসা, তেল ব্যবসা এবং সর্বোপরি মানুষ হত্যার পেছনে বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর রাজনীতি ও কূটকৌশল জড়িত। রোহিঙ্গা ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে সৃষ্ট সেই রাজনীতিরই অংশ। এটাকে সস্তা মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই। এটাকে আন্তর্জাতিকভাবে দক্ষ কূটনৈতিক কৌশল দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে এবং উদ্যোগী হতে হবে বাংলাদেশকেই। কোনো অবস্থায়ই ভারত বা চীন উদ্যোগ নেবে এ দুরাশা করাটাই বাতুলতা। করলে সেটা ঐতিহাসিক ভুল হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2020 Dailycoxsbazar
Theme Customized BY Media Text Communications