ডিসিবি ডেস্ক:
ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে আরও ১২ জন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে ৩ জন ইউপি চেয়ারম্যান ও ৯ জন ইউপি সদস্য।
রোববার (১৯ এপ্রিল) মন্ত্রণালয় হতে এ সংক্রান্ত পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর আগে গত ১২ এপ্রিল ৩ জন ও ১৫ এপ্রিল ৯ জন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। কাজেই এ পর্যন্ত মোট ২৪ জন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
নতুন করে সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানরা- হলেন কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখদুম কবীর তন্ময়, নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার অর্জুনপুর বরমহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সাত্তার এবং বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মাঝিহট্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা গোলাম হাফিজ সোহাগ।
আর ইউপি সদস্যরা হলেন- নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার অর্জুনপুর-বড়মহাটি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ রেজা, বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ জাকির হোসেন এবং ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ রোকনুজ্জামান, ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আব্দুর রব পাটোয়ারী, নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য শেখ মোশারেফ হোসেন এবং ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য রনি বেগম, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলার খাসকাউলিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আল-আমিন চৌধুরী এবং ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য মোছাঃ আছিয়া খাতুন।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার কর্তৃক প্রদত্ত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ, ভিজিডির চাল আত্মসাৎ, খাদ্য সহায়তা চাইতে আসা লোকজনকে মারধর, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে দেশের সংকটময় মুহূর্তে এলাকায় অনুপস্থিত থাকা, উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় অনুপস্থিত ইত্যাদি কারণে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে আছেন এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
উল্লেখিত চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ কর্তৃক সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাদের স্বীয় পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
একইসময় পৃথক পৃথক কারণ দর্শানো নোটিশে কেন তাদেরকে চূড়ান্তভাবে তাদের পদ থেকে অপসারণ করা হবে না তার জবাব পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো তাজুল ইসলাম ইতিপূর্বে ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দেন এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়।
রোববার এক বার্তায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম করা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কারণে বর্তমানে অনিয়মের ঘটনা কম পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।